ॐ सभा-য় আপনাদের জানাই স্বাগতম <> Facebook Page www.facebook.com/omsabha <> Facebook Group www.facebook.com/groups/OmSabha <> Blog,Page,Group থেকে বিনা অনুমতিতে লেখা নিলে আইনত অপরাধ বলে গণ্য হবে। <> সকল স্বত্ব ॐ सभा -র দ্বারা সংরক্ষিত ।

Thursday, May 30, 2013

হিন্দুধর্মের সীমানা


[ 'প্রবুদ্ধ ভারত', এপ্রিল, ১৮৯৯

আমাদের প্রতিনিধি লিখিতেছেন, অন্য ধর্মাবলম্বীকে হিন্দুধর্মে আনা সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দের মতামত জানিবার জন্য সম্পাদকের আদেশে স্বামীজীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাই। তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে। আমরা বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠের পোস্তার নিকট নৌকা লাগাইয়াছি। স্বামীজী মঠ হইতে নৌকায় আসিয়া আমার সহিত কথাবার্তা কহিতে আসিলেন। গঙ্গাবক্ষে নৌকার ছাদে বসিয়া তাঁহার সহিত কথোপকথনের সুযোগ মিলিল।

আমিই প্রথমে কথা বলিলাম, ‘  স্বামীজী, যাহারা হিন্দুধর্ম ছাড়িয়া অন্য ধর্ম গ্রহণ করিয়াছে, তাহাদিগকে হিন্দুধর্মে পুনর্গ্রহণ-বিষয়ে আপনার মতামত কি জানিবার জন্য আপনার সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিয়াছি । আপনার কি মত, তাহাদিগকে আবার গ্রহণ করা যাইতে পারে ? ’



স্বামীজী বলিলেন, নিশ্চয়। তাহাদের অনায়াসে গ্রহণ করা যাইতে পারে, করা উচিতও।


তিনি মুহূর্তকাল গম্ভীরভাবে চিন্তা করিয়া বলিতে আরম্ভ করিলেন

'আর এক কথা তাহাদিগকে পুনর্গ্রহণ না করিলে আমাদের সংখ্যা ক্রমশঃ হ্রাস পাইবে। যখন মুসলমানেরা প্রথমে এদেশে আসিয়াছিলেন, তখন প্রাচীনতম মুসলমানের ঐতিহাসিক ফেরিস্তার মতে ভারতে ৬০ কোটি হিন্দু ছিল, এখন আমরা বিশ কোটিতে পরিণত হইয়াছি। আর, কোন লোক হিন্দুসমাজ ত্যাগ করিলে সমাজে শুধু যে একটি লোক কম পড়ে তাহা নয়, একটি করিয়া শত্রু বৃদ্ধি হয়!                                                 

' তারপর আবার হিন্দুধর্মত্যাগী মুসলমান বা খ্রীষ্টানের মধ্যে অধিকাংশই তরবারিবলে ঐ সব ধর্ম গ্রহণ করিতে বাধ্য হইয়াছে, অথবা যাহারা ইতিপূর্বে ঐরূপ করিয়াছে, তাহাদেরই বংশধর। ইহাদিগের হিন্দুধর্মে ফিরিয়া আসিবার পক্ষে নানারূপ আপত্তি উত্থাপন করা বা প্রতিবন্ধকতা করা স্পষ্টতই অন্যায়। আর যাহারা কোনকালে হিন্দুসমাজভুক্ত ছিল না, তাহাদের সম্বন্ধে কি আপনি জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন?  দেখুন না, অতীতকালে এইরূপ লক্ষ লক্ষ বিধর্মীকে হিন্দুধর্মে আনা হইয়াছে আর এখনও সেরূপ চলিতেছে।

' আমার নিজের মত এই যে, ভারতের আদিবাসিগণ, বহিরাগত জাতিসমূহ এবং মুসলমানাধিকারের পূর্ববর্তী আমাদের প্রায় সকল বিজেতৃবর্গের পক্ষেই ঐ কথা প্রযুক্ত হইতে পারে। শুধু তাহাই নহে, পুরাণসমূহে যে-সকল জাতির বিশেষ উৎপত্তির বিষয় কথিত হইয়াছে, তাহদের সম্বন্ধেও ঐ কথা খাটে। আমার মতে তাহার অন্যধর্মী ছিল, তাহাদিগকে হিন্দু করিয়া লওয়া হইয়াছে।
যাঁহারা ইচ্ছাপূর্বক ধর্মান্তর গ্রহণ করিয়াছিল, কিন্তু এখন হিন্দুসমাজে ফিরিয়া আসিতে চায়, তাহাদের পক্ষে প্রায়শ্চিত্ত-ক্রিয়া আবশ্যক, তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু যাহাদিগকে বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হইয়াছিলযেমন কাশ্মীর ও নেপাল অনেককে দেখা যায়, অথবা যাহারা কখন হিন্দু ছিল না, এখন হিন্দুসমাজে প্রবেশ করিতে চায়, তাহাদের পক্ষে কোনরূপ প্রায়শ্চিত্ত-ব্যবস্থা করা উচিত নহে।

সাহসপূর্বক জিজ্ঞাসা করিলাম, 'স্বামীজী, কিন্তু ইহারা কোন্ জাতি হইবে? তাহাদের কোন-না-কোনরূপ জাতি থাকা আবশ্যক, নতুবা তাহারাকখন বিশাল হিন্দুসমাজের অঙ্গীভূত হইতে পারিবে না। হিন্দুসমাজে তাহাদের যথার্থ স্থান কোথায়?’

স্বামীজী ধীরভাবে বলিলেন,যাহারা পূর্বে হিন্দু ছিল, তাহারা অবশ্য তাহাদের জাতি ফিরিয়া পাইবে। আর যাহারা নূতন, তাহারা নিজের জাতি নিজেরাই করিয়া লইবে।

তিনি আরও বলিতে লাগিলেন,স্মরণ রাখিবেন, বৈষ্ণবসমাজে ইতিপূর্বেই এই ব্যাপার ঘটিয়াছে এবং অহিন্দু ও হিন্দুধর্মের বিভিন্ন জাতি হইতে যাহারা ধর্মান্তর গ্রহণ করিয়াছিল, সকলেই বৈষ্ণব সমাজের আশ্রয় লাভ করিয়া নিজেদেরই একটা জাতি গঠন করিয়া লইয়াছিল, আর সে-জাতি বড় হীন জাতি নহে, বেশ ভদ্র জাতি। রামানুজ হইতে আরম্ভ করিয়া বাঙলাদেশে শ্রীচৈতন্য পর্যন্ত সকল বড় বড় বৈষ্ণব আচার্যই ইহা করিয়াছেন।

আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এই নূতন যাহারা আসিবে, তাহাদের বিবাহ কোথায় হইবে ?

স্বামীজী স্থিরভাবে বলিলেন, এখন যেমন চলিতেছে, নিজেদের মধ্যেই।

আমি বলিলাম, তারপর নামের কথা। আমার বোধ হয়, অহিন্দু এবং যে-সব স্বধর্মত্যাগী অহিন্দু নাম লইয়াছিল, তাহাদের নূতন নামকরণ করা উচিত। তাহাদিগকে কি জাতিসূচক নাম বা আর কোনপ্রকার নাম দেওয়া যাইবে ?’


স্বামীজী চিন্তা করিতে করিতে বলিলেন, অবশ্য নামের অনেকটা শক্তি আছে বটে।
কিন্তু তিনি এই বিষয়ে আর অধিক কিছু বলিলেন না। কিন্তু তারপর আমি যাহা জিজ্ঞাসা করিলাম, তাহাতে তাঁহার আগ্রহ যেন উদ্দীপ্ত হইল।

প্রশ্ন করিলাম-'স্বামীজী, এই নবাগন্তুকগণ কি হিন্দুধর্মের বিভিন্নপ্রকার শাখা হইতে নিজেদের ধর্মপ্রণালী নিজেরাই নির্বাচন করিয়া লইবে অথবা আপনি তাহাদের জন্য একটা নির্দিষ্ট ধর্মপ্রণালী নির্বাচন করিয়া দিবেন?'



স্বামীজী বলিলেন, এ-কথা কি আবার জিজ্ঞাসা করিতে হয়?তাহারা আপনাপন পথ নিজেরাই বাছিয়া লইবে। কারণ নিজে নির্বাচন করিয়া না লইলে হিন্দুধর্মের মূলভাবটিই নষ্ট করা হয়। আমাদের ধর্মের সার এইটুকু যে, প্রত্যকের নিজ নিজ ইষ্ট-নির্বাচনের অধিকার আছে। '

আমি এই কথাটি বিশেষ মূল্যবান্ বলিয়া মনে করিলাম। কারণ আমার বোধ হয়, আমার সম্মুখস্থ এই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা বৈজ্ঞানিকভাবে ও সহানুভূতির দৃষ্টিতে হিন্দুধর্মের সাধারণ ভিত্তিসমূহের আলোচনায় অনেক দিন কাটাইয়াছিলাম আর ইষ্ট-নির্বাচনের স্বাধীনতারূপ তত্ত্বটি এত উদার যে, সমগ্র জগৎকে ইহার অন্তর্ভুক্ত করা যাইতে পারে।

স্বামী বিবেকানন্দের রচনা থেকে বুদ্ধদেব

বুদ্ধদেব তখন তাদের প্রত্যেককে স্বতন্ত্রভাবে এই কথা বলেছিলেন, ‘তোমাদের আত্মগোষ্ঠী সবাই সত্যলাভের জন্য এক একটি পথ নির্দেশ করেছেন । উত্তম! কিন্তু তুমি নিজে কি ঈশ্বর দর্শন করেছ ? অথবা তোমাদের পিতা কিংবা পিতামহ কি ঈশ্বর দর্শন করেছেন ?’

‘না, তাঁরা কেউ দর্শন করেন করেননি, তাঁদের পিতা- পিতামহও ঈশ্বর দর্শন করেননি ।’

‘আচ্ছা , তোমাদের আচার্যদের মধ্যে কেউ কি ঈশ্বর দর্শন করেছেন?’

‘না, তাঁরাও ঈশ্বর দর্শন করেননি।’

সকলের মুখেই এক উত্তর । সকলেরই এক কথা । কেউ তারা ঈশ্বর দর্শন করেননি ।

তখন বুদ্ধদেব সেই পঞ্চ তরুণকে একটি উপাখ্যান শুনিয়েছিলেন ; বলেছিলেনঃ দেখ , একবার এক গ্রামে হঠাত কোথা থেকে একটি যুবক উপস্থিত হয়েছিল । সে কখনো কাঁদছে , কখনো বিলাপ করছে , কখনো চিৎকার করছে। বলছে ‘আহা আমি তাকে অত্যন্ত ভালোবাসি, নিবিড়ভাবে ভালোবাসি।’ তার চিৎকারে গ্রামবাসীরা বেরিয়ে এল। তাকে জিজ্ঞাসা করল ‘কাকে তুমি ভালবাসো? কে সে?’ ‘তা আমি জানি না।’ ‘কোথায় থাকে সে কন্যা? তার চেহারাই বা কেমন?’ ‘হায়, আমি সে – সব কিছুই জানি না। কোন সংবাদ রাখি না। শুধু এইটুকু জানি যে, আমি তাকে অত্যন্ত ভালবাসি।’

এখন এই যুবকটি সম্বন্ধে তোমাদের অভিমত কি-তা আমি জানতে চাই ।

তরুণগণ তখন সবাই একযোগে বলে উঠল, ‘কেন মশাই, ও তো একটি আস্ত নির্বোধ ! যাকে সে জানে না, চেনে না, যাকে কখনো দেখেনি- এমন একটি অবাস্তব মেয়ের জন্য যে চিৎকার করে বেড়াচ্ছে, তাকে একান্ত বেকুব ভিন্ন আর কি বলা যাবে?’

তখন বুদ্ধ বললেন, ‘তাহলে তোমরাও কি অনেকাংশে তাই নও! তোমরা নিজেরাই স্বীকার করছ যে, তোমরা কিংবা তোমাদের পিতা, পিতামহ কেউ কখনো ঈশ্বর দর্শন করেনি । ঈশ্বর- সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ – জ্ঞান বংশপরম্পরায় তোমাদের কারও নেই । অথচ সেই ঈশ্বর নিয়েই তোমরা তর্ক করছ, পরস্পরের টুঁটি ছিঁড়ে ফেলতে চাইছ। একি পাগলামি নয়?’

তখন তরুণগণ বিব্রত হয়ে বুদ্ধকে প্রশ্ন করল, ‘তাহলে এখন আমাদের কি করা উচিৎ- তাই বলুন।’ বুদ্ধদেব বললেন, ‘বেশ, তবে শ্রবন কর। আচ্ছা তোমাদের পূর্বপুরুষগণ কখনো কি এমন কথা বলেছেন যে, ভগবান কোপন – স্বভাব, ভগবান অসৎ?’ ‘আজ্ঞে না, তেমন কথা তাঁরা কখনো বলেননি । তিনি চির- সৎ , চির- পবিত্র – এই তাঁরা বলেছেন।’

‘তাহলে হে তরুণগণ- তোমরা যদি কায়মনোবাক্যে সৎ হও , সর্বভাবে পবিত্র হও, তবেই ভগবানের সান্নিধ্যে পৌঁছাতে পারবে । তর্ক- বিতর্ক করে বা পরস্পরকে আক্রমণ করে ভগবান লাভ হয় না। অতএব আমার নির্দেশ এই যে – পবিত্র হও, সৎ হও। সর্বান্তঃকরণে অপরকে ভালবাস । ভগবানলাভের এই চিরন্তন পথ, অন্য পথ কিছু নাই।’

( স্বামী বিবেকানন্দের রচনা থেকে সংগৃহীত )

Sumon Basak
https://www.facebook.com/groups/OmSabha থেকে

মাতা আনন্দময়ী : জগন্মাতার প্রত্যক্ষ অনুভবে পূর্ণ কৃপা মূর্তি

১৩০৩ বঙ্গাব্দের ১৯ বৈশাখ, বৈশাখী কৃষ্ণা চতুর্থীর দিন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ত্রিপুরা জেলার খেওরা গ্রামে আধুনিক ভারতের ও বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্ম গুরু শ্রী শ্রী আনন্দময়ী মায়ের শুভ আবির্ভাব ঘটে ।
শৈশবে তাঁর নাম ছিল নির্মলা। ছোট বেলায় তিনি গাছ পালার সাথে বন্ধুর মত কথা বলতেন । উত্তরকালে সর্বস্তরের মানুষ ছাড়াও পশু ,পাখির সাথেও তাঁর মাধুর্য ময় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
ধ্যানস্থ
 আনন্দময়ীর মাথায় বিষাক্ত সাপও ফণা বিস্তার করে রাখত। ওঙ্কারনাথ সহ অগনিত সাধক ও লাখ লাখ ভক্ত তাঁকে জগন্মাতা কালীর অবতার বলে শ্রদ্ধা করতেন।
তিনি সেই বিরলতম সাধিকা, যিনি কোনও গুরু ছাড়াই স্বয়ং সিদ্ধা হয়েছিলেন। ঢাকার শাহবাগ সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়িতে তাঁর প্রকাশ্য সাধন জীবন শুরু হল আর এখানেই তাঁর নামকরন হল "আনন্দময়ী মা"।
 তাঁর জীবন ছিল ভারতীয় সনাতন হিন্দুত্বের সকল ধারায় অভিষিক্ত। শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব, বেদান্ত, সাকার, নিরাকার ,বেদ,তন্ত্র,পুর
ান প্রভৃতি সাধন রীতি তাঁর জীবনে মূর্ত হয়েছে। সর্বোপরি দল মত, জাতিধর্ম নির্বিশেষে তাঁর সর্বজনীন অপূর্ব প্রেম দেশ বিদেশের রাষ্ট্র নেতা , লেখক , শিল্পী ,জনগণকে মুগ্ধ করেছিল।সনাতন হিন্দু শাস্ত্র ও ধর্মের প্রসারের জন্য তিনি বহু মঠ, মন্দির, প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন যা আজো মায়ের আদর্শ বহন করে চলেছে।


১৯৬১ সালের ১ এপ্রিল এক জার্মান মহিলা মাকে দর্শন করতে এসে জিজ্ঞাসা করেন,"কেমন করে ধ্যান কালে মন কে নিবিষ্ট করা যায়?ধ্যান কালে কি মন কে কি কোন বিষয় বস্তুকে অবলম্বন করবে? নাকি শূন্য থাকবে?'' এ কথা সুনে ওই খানে উপস্থিত রাজপুতানার রানীর মুখ উজ্বল হয়ে ওঠে। তিনিও এই প্রশ্নটি মাকে করবেন বলে বহুদিন ভাবছিলেন। আজ সেই প্রশ্নটি উত্থাপিত হল এই বিদেশীর মাধ্যমে!

মা উত্তরে বললেন," দুভাবেই করা যায়। যারা দেব দেবীর ভক্ত ,তাঁরা কোন না কোন মূর্তির চিন্তন করবে। আবার মনকে শূন্য রেখেও কিংবা চুপ থেকে দেখা যেতে পারে।তবে এটা কঠিন কাজ। এ অবস্থায় মানুষ অন্তর্নিহিত জ্যোতির ধ্যান করতে পারে...।" সাকার -নিরাকার সাধনা সম্পর্কে তাঁর সাধনা লব্ধ এই বিবৃতি অনুসরনীয়।

সংসারের দুঃখের কারন ও তা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে তিনি আমাদের যে অগণ্য উপদেশ দিয়েছেন তার কয়েকটি উদ্ধৃত করছি।
"জন্ম জন্মান্তরের সংস্কার -ই বন্ধনের মূল।কর্মের দ্বারা যে সংস্কার গড়ে ওঠে, কর্মের দ্বারাই ইহা ভাঙে। ...শুভ কর্ম করতে করতে জতই শুভ সংস্কার বৃদ্ধি পায় ততই অশুভ সংস্কার গুলি দূরীভূত হয়। অবশেষে আগুন যেরূপ আবর্জনা দি ভস্ম করে আপনা হতেই আপনি নিভে যায় , তদ্রুপ শুভ সংস্কার গুলি স্বয়ং - ই লোপ পায়। "
"স্মরন করে রাখ, স্মরন করে রাখ। ভগবানের নাম সর্বদা স্মরন করতে করতে এই সংসার কারাগারের দিন কেটে যাবে। নিজে তো ভাল হবার চেষ্টা করবি-ই যে যেখানে আছে তাদেরও ডেকে নিবি। "

জয় মা। সনাতন হিন্দু ধর্মের জয় হোক।
Debasish Singha

Like your page
https://www.facebook.com/OmSabha 


Wednesday, May 29, 2013

বেদ ও গীতা : হিন্দুর সনাতন আশ্রয়

বেদ ঈশ্বরের বাণী নয়।
শাস্ত্রে বেদকে ঈশ্বরের নিঃশ্বাস বলা হয়।
এক একজন ঋষির তপস্যা পূত দৃষ্টির সামনে বেদের সূক্ত গুলো প্রকট হয়েছিল।
ঋষিরা তাই বেদ মন্ত্রের স্রষ্টা নন, দ্রষ্টা।


স্বয়ং ঈশ্বরের বাণী কিন্তু ভগবদ গীতা যা কুরু যুদ্ধের প্রারম্ভে শ্রী ভগবান অর্জুন কে বলেছিলেন। গীতা ওই বেদোক্ত জ্ঞানের -ই সার ভাগ। এখনও অব
ধি ২০০০০ -এর মত বৈদিক মন্ত্র পাওয়া যায়, যদ্যপি আরও মন্ত্র বেদে ছিল। সেগুলো লুপ্ত। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় সমগ্র বেদ-এর জ্ঞান পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয় নি। বৈদিক পূর্ণ জ্ঞান ভগবদ গীতার ৭০০ শ্লোকের মধ্যে বিধৃত হয়ে আছে। তাই বেদ ও বেদ মূলক গীতা ----দুইটি শাস্ত্র -ই সনাতন হিন্দু জনতার সব সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ,মূল অবলম্বন।

কপি রাইট : দেবাশিস সিংহ

Debasish Singha

Like your page
https://www.facebook.com/OmSabha

শ্রী নিত্যগোপালদেব (জ্ঞানানন্দ অবধূত) : অবতারকল্প দিব্যাত্মা

শ্রী রামকৃষ্ণের সম সাময়িক এক বাঙালি হিন্দু সাধক নিত্য গোপাল দেব (এঁর কথা "রামকৃষ্ণ কথা মৃতে" আছে । ঠাকুর এঁকে সম্মান করতেন)
শ্রী নিত্যগোপালদেব
শ্রী নিত্যগোপালদেব(জ্ঞানানন্দ অবধূত)  : অবতারকল্প দিব্যাত্মা
---------------------------------------------------------------
 শ্রী নিত্যগোপালদেব ১২৬১ বঙ্গাব্দের ১৩ চৈত্র বাসন্তী অষ্টমীতে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পানি হাটিতে আবির্ভূত হন। আড়াই বছর বয়স থেকেই তাঁর নির্বিকল্প সমাধি হত। শৈশবেই মাতামহীর নিকট থেকে তিনি তাঁর দীক্ষামন্ত্র লাভ করেছিলেন। বাল্যে ২ জন নিষ্ঠাবান বৈষ্ণব তাঁকে গৌরাঙ্গ রূপে দর্শন করেছিলেন। উত্তরকালে তাঁকে কেউ কালী, কেউ কৃষ্ণ, কেউ শিব , কেউ দুর্গা প্রভৃতি রূপে দর্শন করেছিলেন। ১৬ বছর বয়সে কালী ঘাটে গুরু পূর্ণিমার দিন তিনি ব্রহ্মানন্দ অবধূতের নিকট সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। এরপর ৬ বছর ধরে কৈলাস সহ বহু তীর্থ ভ্রমন করেন। তবে কাশী, কলকাতা ও নবদ্বীপে তিনি লীলা জীবনের অধিক কাল কাটিয়েছেন। অধুনা লুপ্ত কাশী স্থিত প্রাচীন "মহা নির্বাণ" মঠ ১৩০১ -এ তিনি কলকাতায় পঞ্চ ক্রোশী কালী ঘাটের অন্তর্গত রাসবিহারী এভিনিউ তে পুনঃ স্থাপিত করেন। এর শাখা বাংলার নানা স্থানে আছে। ১৩১৭ সালে তাঁর দেহ ত্যাগের পর এই স্থানেই তাঁকে ,তাঁর ইচ্ছা ক্রমে সমাহিত করা হয়।

নিত্য গোপাল ছিলেন জ্ঞান -কর্ম - ভক্তি -প্রেমের সমন্বয় মূর্তি।বেদোক্ত ব্রহ্ম, তন্ত্রোক্ত মহাশক্তি , পুরাণোক্ত ভগবান কে লাভ করবার নানা পথকে তিনি সমান মর্যাদা দিয়েছেন এই বলে," ঈশ্বর পুরীর নানা দ্বার। সেই পুরীর এক একটি দ্বার এক এক সাম্প্রদায়িক মত। ঈশ্বর পুরীতে প্রবেশ করিতে হইলে যে কোন সাম্প্রদায়িক দ্বার দ্বারাই প্রবেশ করা যায়।" অধাত্ম পিপাসু কোন ব্যাক্তি -ই তাঁর কাছ থেকে বিমুখ হত না। নারী- পুরুষ, হিন্দু- অহিন্দু ,ধনী-দরিদ্র ---সকলকেই তিনি আশ্রয় দিতেন। এমনকি পতিত, ঘৃণিত,পাপী নারী পুরুষ -ও তাঁর কৃপা থেকে বঞ্চিত হয় নি।

আজকাল যে ভারতবাসী স্বদেশের স্বধর্ম চর্চা ভুলে বিদেশের পরধর্ম নিয়ে মাতামাতি করছে , তার সূচনা সেই কালেই হয়েছিল। সে সম্পর্কে তাঁর মত ," আর্য শাস্ত্রের অগ্রে সামঞ্জস্য করে , পরে পৃথিবীর শাস্ত্র এক কর।" শাস্ত্র সমুদ্রের কত টুকু নিতে হবে সে বিষয়ে বলেন," অত্যুত্তম আম্রের ত্বক প্রভৃতি পরিত্যাগ করিতে হয়। আমরা জগতের সকল শাস্ত্রের সার গ্রাহী।" এই ভাবনা থেকে তিনি কোরান ,বাইবেল -ও চর্চা করতেন।একদা তিনি মুসলমান শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন, যার মুসল অর্থাৎ ঈশ্বরে ইমান বা পূর্ণ আস্থা আছে ,পৃথিবীতে সেই মুসলমান।যার ঈশ্বরে আস্থা নেই --সেই নাস্তিক -ই মাত্র অমুসলিম। এই বিরাট বিচারে কৃষ্ণ ভক্ত, খ্রিস্ট ভক্ত, আল্লাহ ভক্ত, প্প্রকৃতি পুজক আদিবাসী সকল আস্তিক-ই মুসলমান। মুস্লিমগন যদি এই সূত্র অবলম্বন করে সমুদায় মানব জাতিকে উদার ভাবে গ্রহণ করতে পারত , যদি তারা অপরের আধ্যাত্মিকউপাসনা পদ্ধতির বিভিন্নতা ও সাংস্কৃতিক ও দার্শনিক বৈশিষ্ট্যকে স্বীকার করে নিত ,তাহলে মুসলিম জাতি ও ইসলাম সকলের বরণীয় হয়ে উঠত।মনে রাখতে হবে, সন্ত্রাসবাদের দ্বারা নয়,প্রেম দ্বারাই সভ্যতাকে জয় করা যায়।কিন্তু , দুর্ভাগ্যের কথা বিশ্বের প্রায় কোন মুসলমান -ই ভগবৎপাদ নিত্যগোপালের এই বার্তা আজো গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।


বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, বিবেকানন্দ প্রমুখ মহাপুরুষ ও ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের মত অবতার পুরুষ তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন। বিশেষ করে রামকৃষ্ণের সাথে তাঁর মধুর পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও প্রীতির সম্পর্ক ছিল। ঠাকুরের সাথে নিত্য গোপালের প্রথম সাক্ষাৎ কার দক্ষিণেশ্বরে হয়। তার বর্ণনা তাঁর জীবনী থেকে দিচ্ছি।
"ঠিক এই সময় ত্রৈলোক্য বিশ্বাস ও তাঁহার মাতার কালী বাড়ী দখল সম্বন্ধে বাহিরে একতা মহা দাঙ্গা হাঙ্গামা উপস্থিত হওয়ায় রামচন্দ্র ,মন মোহন প্রভিতি বাহিরে গেলেন। কিন্তু নিত্য গোপালকে উদাসিন ভাবে সেখানে উপবিষ্ট থাকিতে দেখিয়া শ্রী রাম কৃষ্ণ পরম হংস দেব বলিলেন ,"তুমি গেলে না?" ...তিনি উদাশ হইয়া উত্তর দিলেন,"দেহের ভিতরের হাঙ্গামাই মিটাইতে পাড়া যায় না । বাহিরের হাঙ্গামা আর কি দেখব ? সংসারি লোকের এমন হাঙ্গামা প্রায়-ই ঘটে থাকে ।"শ্রী পরমহংস ইহা শুনিয়া অত্যন্ত আশ্চর্য হইলেন এবং নিত্য গোপাল দেবের প্রতি এক দ্রিস্তে চাহিয়া রহিলেন। ... রামচন্দ্র প্রভিতি ভক্ত গন ফিরিয়া আসিলে ,তিনি আনন্দে বলিয়া উঠিলেন, "নিত্য টি অন্তঃ সার বিশিষ্ট আমের মত ।...নিত্য কত বড় পড়ে বুঝতে পারবে।"


আর একবার দক্ষিনেস্বরে সমাধিস্থ নিত্য গোপাল কে স্পর্শ করে ঠাকুর -ও সমাধিস্থ হলেন। সমাধি হতে ,অর্ধ বাহ্য দশায় এসে দুজনে ভাবাবেশে অ লৌকিক ভাষায় কথা বলতে লাগলেন।, যা কোনও ভক্তই বুঝতে পারছিলেন না। ঠাকুর কিছু পড়ে বাহ্য দশায় ফিরলেও নিত্য গোপাল পূর্ববত রইলেন। এ দেখে ---
" কেহ কেহ বলিলেন যে ,"আপনার দর্শন ও কৃপা প্রভাবে ইহার এরুপ সমাধি লাভ হয়েছে। পরমহংস দেব জিব কাটিয়া বলিলেন," রাম! রাম ! একথা মুখেও আনিস না। ও যে নিত্য সিদ্ধ, শম্ভু। স্বয়ম্ভূ। নিত্য কারো কৃপার অপেক্ষা রাখে না। "পরে সমাধি ভঙ্গ হলে নিত্য গোপালের গলা জড়িয়ে ঠাকুর বল্লেন,""নিত্য শঙ্কর, পরম হংস,অব ধূত । নিত্য বলেই এ অবস্থায় কোমরে কাপর রাখতে পারছে।"নিত্য গোপালকে ঠাকুর মাত্র পরমহংস বলে সম্মান দেন নি। তাঁকে সাক্ষাৎ ঈশ্বর জ্ঞান -ও করতেন। একদা বয়সে বড় ঠাকুর নিত্য গোপালকে প্রণাম করলে ,নিত্য গোপাল -ও পুনঃ পুনঃ প্রতি নমস্কার করেন ও ঠাকুরের এই কাজের কারন জানতে চান । উত্তরে তিনি বলেন,
"তুই যে প্রত্যক্ষ নারায়ন। তোকে--- " বলিতে বলিতেই উচ্ছ্বসিত ভাবাবেশে আবিষ্ট হইয়া পড়িলেন। "দেহ ত্যাগের পূর্ব দিবস ঠাকুর নিত্য গোপালকে পুস্পাদি সহ পূজা করেন ও নিত্য গোপালও তাঁকে সেই পূজিত পুস্প দ্বারা পূজা করেন।এর দ্বারা উভয়ের পারস্পরিক শ্রদ্ধার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ঠাকুরের দেহ ত্যাগের পর তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে যখন রামকৃষ্ণ ভক্ত মণ্ডলীতে বিবাদ হয় ,তিনি মধ্যস্থ করে তাঁর- ই বাগান বাড়ী কাঁকুড় গাছি যোগউদ্যানে রামকৃষ্ণের অস্থি কলস স্থাপন করেন।

ঠাকুরের প্রয়ানের পর-ও বহুদিন নিত্য গোপাল দেহে ছিলেন। এই সময় রামকৃষ্ণ কথামৃতের নতুন সংস্করনে নিত্য গোপালের প্রতি ঠাকুরের একটি বক্তব্য"নিত্য তুইএসেছিস? আমিও এসেছি"এই বানীটি বাদ দেয়া হয়। রামকৃষ্ণ মণ্ডলীর এক অংশের চাপে এই পরিবর্তন করা হয়েছিল। কারন ওই অংশের মনে হয়েছিল , ঠাকুরের ওই বক্তব্যে নিত্য গোপালের সাথে ঠাকুরের মহিমার অভিন্নতা প্রতিপাদিত হয়ে যেতে পারে। এই চাপের কথা জেনে নিত্য গোপাল উষ্মা প্রকাশ করেন । পরে রামকৃষ্ণ কথামৃতের নতুন সংস্করনে আবার ওই অংশ ফিরে আসে।

নিত্য গোপাল ঠাকুরের মতই নিজ ভক্ত মণ্ডলীতে ঈস্বরাবতার রূপে পূজ্য ছিলেন।
নারী সম্পর্কে ঠাকুর ও নিত্য গোপাল দুজনেই উদার ভাবাপন্ন ছিলেন। উভয়েই মহিলা ভক্তদের সাথে অবাধে আলাপ করতেন।এতে তাঁদের কারো পতন হয় নি। মহাপুরুষ বা অবতারগন সময় সময় নিজেদের কে উপলক্ষ করে ভক্ত ,অনুগামীদের শিক্ষা দেন ।নিত্য গোপাল কে নারী বিষয়ে সতর্ক করে ঠাকুর বাস্তবিক পক্ষে ভক্তদের সাবধান করছেন। কথাম্রিতকার -ও তাই বললেন, “সাধু সাবধান” -- ভক্তেরা এই মেঘগম্ভীরধ্বনি শুনিতেছে। "

নিত্য গোপাল বলছেন," সাধনার এক অবস্থায় ধন, সম্ভ্রম ও যুবতী অনিষ্টের কারন হইতে পারে। সিদ্ধ মহাপুরুষের ওই তিন কিছুতেই অনিষ্ট করিতে পারে না! ...যিনি আত্মাতে রমন করেন করেন তাঁহার সামান্য ললনাতে রমন করিবার ইচ্ছা হইবে কেন? ...পরম হংস সম্পূর্ণ নির্বিকল্প। তিনি কিছুতেই রত নহেন। ... যুবতী মণ্ডলীর মধ্যে থাকিলেও তাঁহার কোন ক্ষতি হয় না। "

অধুনা লুপ্ত কাশী স্থিত প্রাচীন "মহা নির্বাণ" মঠ ১৩০১ -এ তিনি কলকাতায় পঞ্চ ক্রোশী কালী ঘাটের অন্তর্গত রাসবিহারী এভিনিউ তে পুনঃ স্থাপিত করেন। এর শাখা বাংলার নানা স্থানে আছে। ১৩১৭ সালে তাঁর দেহ ত্যাগের পর এই স্থানেই তাঁকে ,তাঁর ইচ্ছা ক্রমে সমাহিত করা হয়। 
সূত্র : শ্রী শ্রী নিত্য গোপাল চরিতামৃত , মহানির্বাণ মঠ

Debasish Singha

Like your page
https://www.facebook.com/OmSabha


দেবী গন্ধেশ্বরী

শ্রী শ্রী চণ্ডী তে আদি শক্তি পরমেশ্বরী দেবীগনে পরিবৃত হয়ে যখন শুম্ভাসুরের সাথে যুদ্ধ করছিলেন,তখন শুম্ভ দেবীকে ক্রুদ্ধ হয়ে বলে,"রে অহঙ্কারী ! তুমি অন্য দেবীদের সাহায্য নিয়ে যুদ্ধ করে চলেছ।অতি মানিনী হোয় না। " তা শুনে মহাশক্তি বললেন, " একৈ বাহং জগত অত্র দ্বিতীয়া কা মমাপরা।" ---আমি ছাড়া এ জগতে দ্বিতীয় কে আছে? দেখ, এই সব-ই আমার বিভুতি। তাই এরা সবাই আমার মধ্যে লীন হচ্ছে। এরপর সকল দেবী মূল আদি শক্তির মধ্যে বিলীন হলেন। শাক্তমতে , এর তাৎপর্য হল এই যে ,ভিন্ন রূপে প্রতীয় মান হলেও ,তত্ত্বত ঃ সব কিছুই মহাশক্তির বহিঃ প্রকাশ। আরও একটি তথ্য পাই যে সকল দেবী ,একটি মহা শক্তি হতে নির্গত হয়েছেন। মনসা, চণ্ডী, ষষ্ঠী, শীতলা , বন দুর্গা , বহুচেরা, ভেরুন্ডা,মহগ্রতারা, প্রজ্ঞা পারমিতা ,বেন তেন সহ ভারত ও অভারতীয় পূজিত বা অধুনা বিস্মৃত দেবীকুল এক আদি শক্তি থেকে জাত হয়েছেন।
গন্ধেশ্বরী -ও তার ব্যতিক্রম নন। সিংহ বাহিনী , ত্রিনয়নী, চতুর্ভুজা , শঙ্খ ,চক্র , ধনুক, বাণ ধারিণী এই দেবী বনিক কুলের কুল দেবী। হিন্দু- বৌদ্ধ নির্বিশেষে তাঁর পূজা এক কালে বঙ্গীয় বনিক দের নানা শাখায় অনুষ্ঠিত হত বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন। বাংলাদেশের পাহাড় পুর বৌদ্ধ বিহারে অন্যান্য হিন্দু দেব দেবীর সাথে গন্ধেশ্বরীর -ও একটি মূর্তি আছে।তবে সেটি ওই বৌদ্ধ বিহারের মত খুব প্রাচীন নয়। দেবীকে প্রণাম করে আসুন প্রার্থনা করি ,যাতে ব্যবসা বিমুখ বাঙালির বানিজ্যে উন্নতি হয়।

জয় মা। সনাতন হিন্দু ধর্মের জয় হোক।

Debasish Singha

Like Your Page
http://www.facebook.com/OmSabha

গোহত্যা কেবল হিন্দুত্বের নয়,মানবতার-ও কলঙ্ক

৫০০ বছর আগে বাঙ্গালী জাতির মাঝে স্রীভগবান শ্রীচৈতন্য রূপে অবতার নিয়েছিলেন। সেইসময় নদিয়ায় কাজীর অত্যাচারে হিন্দুর ধন,প্রান,ধর্ম রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
শ্রীচৈতন্য শুধু সেই কুশাসন বন্ধ করেছিলেন তাই নয় ,কাজীর মনুষ্যত্ব জাগিয়ে দিয়েছিলেন ।
বলদ ও গোহত্যা প্রসঙ্গে মহাপ্রভু সেসময় কাজীকে বলেছিলেন যে ,যেহেতু বলদ উদয় অস্ত লাঙল টেনে শস্য উৎপাদনে সাহায্য করে ,তাই সে পিতৃতুল্য। আর দুগ্ধজাত বস্তু দ্বারা আমাদের প্রতিপালন করে বলে গাভী মাতৃ তুল্য। তাই এদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এদের হত্যা না করে ভালবেসে সেবা করা উচিত।

"প্রভু কহে গোদুগ্ধ খাও গাভী তোমার মাতা ।বৃষ অন্ন উপজাত তাতে তেহ পিতা।। পিতা মাতা মারি খাও এবা কোন ধর্ম। কোন বলে কর তুমি এমত বিকর্ম।। "(চৈতন্য চরিতামৃত) মহাপ্রভুর যুক্তি কাজী মেনে নেন ও সনাতন হিন্দুত্বের আদর্শ গ্রহন করে এক সিদ্ধ পুরুষে পরিনত হন। তাঁর মাজার আজ হিন্দু-মুস্লিম---উভয় সম্প্রয়দায়ের কাছে তীর্থ স্বরুপ।
নবদ্বীপের সেই তীর্থ দর্শনের সৌভাগ্য আমার একবার হয়েছিল।
দয়া, মমতা, করুনা,প্রেম,কৃতজ্ঞতা ,বিনয়---এইসব মানবিক গুণ অর্জন করা হিন্দু ধর্মের মূল লক্ষ্য। গোহত্যা না করে,গোসেবা করে হিন্দু এইসব সদ বৃত্তির অনুশীলন করে। আসুন ,বিদ্রূপ না করে এই গুণ অনুশীলনে আমরা সবাই এগিয়ে আসি।

সনাতন হিন্দু ধর্মের জয় হোক। মানবতার জয় হোক। হরি ওঁ ।

Debasish Singha

Like Your Page
www.facebook.com/OmSabha

হিন্দুর কর্তব্য

হিন্দু ধর্ম বহু শত বছর ধরে বহুতর সামাজিক -সাংস্কৃতিক আত্তীকরণ করে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করেছে। এক কালের বহিরাগত আক্রমন কারী শক -হুন দলকে ক্ষত্রিয় বলে মেনে নিয়েছে। আজকের রাজপুত জাতি তার-ই উত্তরাধিকারী। বেদ বাহ্য ব্রাত্য , বৌদ্ধ, জৈন, নাস্তিক রাও কালে কালে হয় হিন্দুত্বের ধারায় মিশে গেছে, নয় মুসলিম হয়েছে। আত্তীকরনের সেই প্রচেষ্টা শাস্ত্র ও মহাপুরুষের জীবন কথায় বিধৃত হয়ে আছে। 

বৌদ্ধ বিপ্লবের থেকে হিন্দুত্বের উত্থানের কালে শঙ্কর বৌদ্ধ ,জৈন ও নানা বেদাদি শাস্ত্র ভ্রষ্ট হিন্দু উপমত গুলির মানুষদের সঙ্খিপ্ত প্রায়শ্চিত্ত করিয়ে সনাতন হিন্দুত্বে স্থাপিত করেছিলেন। চৈতন্যের সংস্পর্শে নদীয়ার কাজি বহুলাংশে ও যবন হরিদাস সম্পূর্ণ ভাবে হিন্দু ধর্মে ফিরে আসেন। উত্তর ভারতে মহাপ্রভুর প্রভাবে একদল মধ্য এশিয়ার পাঠান মুসলিম বৈষ্ণব আদর্শে দীক্ষিত হন। হরিনাম গ্রহণ -ই ছিল এ ক্ষেত্রে হিন্দুত্তে ফেরার একমাত্র যোগ্যতা। কৃষ্ণ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত গোঁড়ামি টুকু ছাড়া প্রভুপাদ ও তাঁর সিশ্যরা ইস্কন কে অবলম্বন করে লক্ষাধিক খ্রিস্টান ও মুসলিমকে হিন্দু ধর্মে এনে ভাল কাজ করেছেন । দয়ানন্দ ও তাঁর অন্নুগামীরা বেদ নিয়ে অস্বাভাবিক গোঁড়ামি প্রদর্শন করেও কিছু সংখ্যক মুসলিমকে দয়ানন্দি হিন্দুত্বে ফিরিয়েছেন। বিনবা ভাবে ও আরও হিন্দু সংস্কারক ভারতের উত্তর ,মধ্য ও উত্তর পূর্বের খ্রিস্টান মত -এর কবল থেকে কিছু হিন্দুকে ফিরিয়েছেন। এখনও কিছু সন্ন্যাসী ও সংগঠন আরব ও ভ্যাটিকানের টাকায় চলা ধর্মান্তরন কে ঠেকানর চেষ্টা করে যাচ্ছে। উড়িষ্যায় স্বামী লক্ষনানন্দ সেই কাজ করতে করতে খ্রিস্টান দের হাতে নিহত হয়েছেন কিছু কাল আগে। এই সব স্বধর্মে ফেরার প্রচেষ্টা শাস্ত্র অবলম্বন করেই হয়েছে আর এখনও হচ্ছে।আধুনিক সকল হিন্দুকে দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে এখন এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করা উচিত।
Debasish Singha

Facebook Comment

আজকের তারিখ